
নরসিংদীতে ফুটবল খেলার বিরোধে ছুরিকাঘাতে নিহত ১৫ বছরের স্কুলছাত্র – আসামিদের বিচার চায় পরিবার.নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলায় ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে সংঘটিত এক ভয়াবহ হামলায় ১৫ বছরের এক স্কুলছাত্র নিহত হয়েছেন। স্থানীয়দের সঙ্গে পূর্ববর্তী বিরোধের জেরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে জানা গেছে।
ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ
নিহত কিশোর রিয়াদ হোসেন (১৫) খিদিরপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন। সে মনোহরদী উপজেলার পশ্চিম মনতলা গ্রামের মো. খুখন মিয়ার ছেলে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার বিকেলে মনতলা সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার মাঠে ফুটবল খেলার সময় পূর্ববর্তী দিনের দ্বন্দ্বের জেরে রামপুর গ্রামের তায়েব ও পরশের নেতৃত্বে ৮-১০ জন যুবক রিয়াদের ওপর হামলা চালায়। তারা তাকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে গুরুতর জখম করে।
আরো অন্যান্য খবর পড়ুন
চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন
আহত অবস্থায় রিয়াদকে উদ্ধার করে স্থানীয়রা মনোহরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহতের বাবা খুখন মিয়া জানান, আগের দিন ফুটবল খেলা নিয়ে বিরোধের জেরেই তার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। তিনি আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন।
পুলিশের তদন্ত ও অভিযান
মনোহরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল জাব্বার জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালে পাঠানো হবে। তিনি আরও বলেন, ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে এবং মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ
এই হত্যাকাণ্ডের পর এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। অনেকে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সমালোচনা করে বলেছেন, অল্পবয়সী ছাত্রের এমন মর্মান্তিক মৃত্যু সমাজে অপরাধ প্রবণতা বাড়িয়ে দিচ্ছে। তারা দ্রুত বিচার ও কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে সহিংসতা: সামাজিক অস্থিরতা
এটি প্রথমবার নয় যে খেলাধুলাকে কেন্দ্র করে এমন রক্তক্ষয়ী ঘটনা ঘটল। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিভিন্ন স্থানে খেলার মাঠে উত্তেজনা ও সহিংসতার ঘটনা বেড়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তরুণদের মধ্যে সহনশীলতা ও শান্তিপূর্ণ সমাধানের মানসিকতা গড়ে তোলার জন্য সামাজিক সচেতনতা প্রয়োজন।
পরিবারের আকুতি: ন্যায়বিচার চাই
নিহত রিয়াদের পরিবার শোকাহত। তার বাবা আইনের শাসন নিশ্চিত করে হত্যাকারীদের কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন। তিনি বলেন, “আমার ছেলে নির্দোষ ছিল। খেলার নামে এমন নৃশংস হত্যা মানবতা বিরোধী। আমরা ন্যায়বিচার চাই।”
উপসংহার
নরসিংদীর এই ঘটনা সমাজে ক্রমবর্ধমান সহিংসতার একটি মর্মান্তিক দৃষ্টান্ত। শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নয়, সমাজের সকল স্তর থেকে এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। নিহতের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা এখন সবচেয়ে জরুরি।
